যাত্রীদের ঢল নেমেছে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ।
নাগরিক২৪ | নাসির উদ্দিন প্রকাশিত: ২১. আগস্ট. ২০১৮ , মঙ্গলবার
যাত্রীদের ঢল নেমেছে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ।
কাঁঠালবাড়ী ঘাটে দূরপাল্লার পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে যাত্রীদের ভীড়।
বাড়তি ভাড়ার আদায়ের অভিযোগ।
আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। ইতোমধ্যেই রাজধানী ঢাকা ছাড়ছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। আজ মঙ্গলবার ভোর থেকেই দেখা গেছে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরি বোঝাই হয়ে ফিরতে যাত্রীদের। ফলে যাত্রীদের ঢল নেমেছে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ।
তবে ঘরে ফিরতে যাত্রীদের রাজধানী থেকেই গুণতে হচ্ছে দ্বিগুন ভাড়া। এই বাড়তি ভাড়ার চাপ মাথায় নিয়েই যাত্রীদের মধ্যে চলছে প্রতিযোগিতা গন্তব্যের গাড়িতে নিজের জায়গা করে নিতে ।
শিমুলিয়া ঘাট থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোটে বাড়তি ভাড়া দিয়ে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে এসে নেমে আবারো গুণতে হচ্ছে দ্বিগুন ভাড়া গন্তব্যের পরিবহনে উঠতে । কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
যাত্রীদের কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে মাদারীপুর, টেকেরহাট, বরিশাল, খুলনা, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, ভাটিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানের পরিবহনেই অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।
জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে বরিশাল পর্যন্ত পরিবহনগুলো নিচ্ছে ৪শ’ থেকে ৪শ ৫০ টাকা, খুলনা সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’, গোপালগঞ্জ ৩শ’ থেকে ৩শ ৫০, ভাটিয়াপাড়া ২শ ৫০’ টাকা। দূরপাল্লার পরিবহন ছাড়া লোকাল পরিবহনেও বেড়েছে ভাড়া। কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে মালিগ্রম ও ভাঙ্গা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে ১শ’ টাকা যেখানে ঈদের আগে ভাড়া ছিল ৬০ টাকা। মাইক্রোবাসে খুলনা ও বরিশালে
বর্তমানে নিচ্ছে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। যেখানে আগে ভাড়া ছিল ২শ’ টাকা।
এসব স্থানে আগে ছিল পরিবহন ভেদে বরিশাল ২শ’ টাকা, খুলনা ২শ’, ভাটিয়াপাড়া ১৫০, গোপালগঞ্জ ১৫০ টাকা । কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে মালিগ্রাম পর্যন্ত ভাড়া ৫০ টাকা এবং ভাঙ্গা পর্যন্ত ৬০ টাকা।
এদিকে কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে বরিশাল, খুলনা, নড়াইলসহ বিভিন্ন স্থানের মাইক্রোবাসেও দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
দ্বিগুন ভাড়া নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবহনের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তিরা জানান, কাঁঠালাবাড়ী ঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ বা বিভিন্ন স্থানে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফিরতে এই ঈদ মৌসুমে কোনো যাত্রী পাওয়া যায় না। পরিবহনগুলো যাত্রী নামিয়ে দিয়ে খালি ফিরে আসে। ফিরে আসার জ্বালানি খরচও ওঠে না। এ কারণে ঈদের সময় ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হয়।
খুলনার যাত্রী ছোবাহান মিয়া জানান, শিমুলিয়া ঘাট থেকে স্পিডবোটে ২শ’ টাকা নিয়েছে। যেখানে ভাড়া দেড়শ’ টাকা। সেই সঙ্গে বড় কোনো ব্যাগ থাকলে তারও ভাড়া দাবি করছে চালকেরা। এখন কাঁঠালবাড়ী ঘাটে এসেও পরিবহনে ডাবল ভাড়া দিতে হচ্ছে ।
মালিগ্রামের আলমাছ আকন বলেন, ৬০ টাকার ভাড়া ১শ’ টাকা দিতে হচ্ছে। লঞ্চেও ৩৫ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা দিয়ে এসেছি। ঈদ আসলেই ঘাটে নৌযান ও পরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের উৎসব চলে। আমাদের এসবের ভোগান্তি মাথায় নিয়েই বাড়ী ফিরতে হয়।
বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে যাত্রীদের চাপ মোকাবিলায় ৮৬টি লঞ্চ ও দুই শতাধিক স্পিডবোট রয়েছে। গত ১০ দিন নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হলেও শনিবার দুপুর থেকে ফেরি চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক। লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে করে গন্তব্যে ফিরছে সাধারণ মানুষ।
শিবচর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ী ঘাটে যাত্রীদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার,ও
ভ্রাম্যমাণ আদালতের একাধিক টিমসহ অসংখ্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সারাক্ষণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। পদ্মা নদীতেও র্যাব ও নৌপুলিশের টহল রয়েছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান আহমেদ জানান, যাত্রীরা যেন কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা রয়েছে।
বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তিনি জানান, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেলে অবশ্যই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা
নাগরিক২৪.কম সহ দেশের বিভিন্ন দৈনিক ও নিউজ পোর্টালে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।